সত্যনারায়ণ সিং,জামুড়িয়া,(খবর7দিন প্লাস):-
সোমবার বেলা প্রায় ১২টা নাগাদ জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত নন্দী শ্মশান সংলগ্ন নন্দী ও দামোদরপুরের মাঝামাঝি জঙ্গলপথে ঘটে গেল এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। বারাবনি থেকে অণ্ডালের দিকে আসা কয়লা বোঝাই একটি মালগাড়ির সামনে হঠাৎ করেই উঠে আসে একটি ট্র্যাক্টর। মুহূর্তের মধ্যে প্রবল ধাক্কা—এতটাই জোরে যে ট্র্যাক্টরটিকে শতাধিক মিটার দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় মালগাড়ি।
দুর্ঘটনায় ট্র্যাক্টরে থাকা তিন জনের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশির ডাঙার বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী ভুটকা সোড়েনের। গুরুতর আহত রাজু মুর্মু এবং সুনীল টুডুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জঙ্গলঘেরা একান্ত নির্জন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে যাওয়ায় প্রথমে স্থানীয়রাই খবর দেন পুলিশকে। খবর পেয়ে জামুড়িয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অ্যান্ডাল জিআরপি-কে জানায়। পরে অ্যান্ডাল জিআরপি এবং রেলওয়ের বিশেষ রেসকিউ দল (ART) আসে উদ্ধারকাজে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় জিআরপি।
জানা গেছে, ট্র্যাক্টরটি নন্দীর একটি ইটভাটা থেকে ইট বোঝাই করে দামোদরপুরের দিকে যাচ্ছিল। এলাকাবাসীর দাবি, এই আনঅথরাইজড রেললাইন পারাপারের পথটি বহু দিন ধরেই ট্র্যাক্টর-সহ বহু যানবাহনের কাছে শর্টকাট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দ্রুত লাইন পার হওয়ার চেষ্টা থেকেই সম্ভবত দুর্ঘটনার জন্ম। এখানে কোনও সরকারি লেভেল ক্রসিং বা বিকল্প রাস্তা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপারের অভিযোগ উঠছে।
দুর্ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত ট্র্যাক্টর মালগাড়ির সামনে আটকে থাকায় কয়েক ঘণ্টা লাইনে বন্ধ থাকে রেল চলাচল। রেলওয়ের রেসকিউ দল প্রথমে গ্যাস কাটার দিয়ে ট্র্যাক্টরের ফেঁসে থাকা অংশ কেটে বাদ দেয়, পরে জেসিবির সাহায্যে সরিয়ে গাড়িটি মুক্ত করা হয়।
মৃত ভুটকা সোড়েন ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়স্বজন। এলাকাবাসীর দাবি, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরিভাবে এই অঞ্চলে একটি সরকারি ক্রসিং বা সেতুর ব্যবস্থা করা হোক।
জিআরপি এবং জামুড়িয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে।



