সুজিত ভট্টাচার্য্য,কাঁকসা(খবর7দিন প্লাস):- দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে আগামী ২৯ তারিখ। পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমের মধ্যে সড়কপথে আরও একটি স্থায়ী যোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা হতে চলেছে আগামী ২৯ তারিখে।
কাঁকসার শিবপুর থেকে বীরভূমের জয়দেব কেন্দুলি পর্যন্ত যে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। তার শুভ সূচনা করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৯ তারিখ বীরভূমের সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিজের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে সেই ব্রিজ উদ্বোধনের আগে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। উদ্বোধনের আগে শনিবার ব্রিজ পরিদর্শন করেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক, ছিলেন কাঁকসার বিডিও পর্না দে,গলসির বিধায়ক নেপাল ঘরুই,এছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা সহ কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য।
ভবানী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দুই জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে কাঁকসার শিবপুর থেকে বীরভূমের জয়দেব কেন্দুলী যাওয়ার জন্য অস্থায়ী ভাবে একটি বালি মাটি দিয়ে তৈরি সেতু নির্মাণ করা হতো এবং সেই সেতু বর্ষার সময় অজয় নদের জলে ভেসে যেত। সেই অস্থায়ী সেতু ভেসে যাওয়ার ফলে দুই জেলার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হত। যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময়। যদিও নৌকা পরিষেবা চালু করা হলেও বড় গাড়ি এবং বাস পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকতো। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর দাবি ছিল ওই জায়গায় একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ হলে দুই জেলার মানুষ উপকৃত হবে। কারণ বর্ষার সময় অজয় নদের জলের তোড়ে অস্থায়ী সেতু ভেসে যাওয়ার ফলে দুই জেলার মানুষকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হত।সেই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পেতেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন দুই জেলার মানুষ। অবশেষে ২ জেলার মানুষের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। সেইমতো গত কয়েক বছর ধরে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও কাঁকসার শিবপুরের দিকে জমি জটের কারণে থমকে গিয়েছিল কাজ। পরে প্রশাসনিক তৎপরতায় জমির মালিকদের সাথে কথা বলে সেই জমি জট কাটিয়ে শুরু হয় কাজ। ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলেও সেটি উদ্বোধন করা হয়নি। কারণ এলাকার মানুষ ও দুই জেলার প্রশাসন চেয়েছিলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়েই এই ব্রিজের উদ্বোধন হোক। সেইমতো ব্রিজ উদ্বোধন করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার ব্রিজ পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসন।
দুই জেলার মানুষ জানিয়েছেন, ব্রিজ উদ্বোধন হয়ে গেলে দুই জেলার মানুষ সমস্যার থেকে মুক্তি পাবে। বাড়বে দুই জেলার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য। এতদিন যে সমস্ত মানুষ কর্ম সূত্রে দুর্গাপুর শহরে যেতেন নানান বাধা অতিক্রম করে। ব্রিজ উদ্বোধন হয়ে গেলে আর কোন বাধা থাকবে না। ফলে অনায়াসেই দ্রুত দুর্গাপুরে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন। এছাড়াও যে সমস্ত কলেজ পড়ুয়ারা দুর্গাপুর শহরের বুকে বিভিন্ন কলেজে পড়াশোনা করতো। তারাও সময়ের মধ্যে নিজেদের কলেজে পৌঁছতে পারবে। এ ছাড়াও দুর্গাপুর শহরে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। ফলে উন্নত মানের চিকিৎসার জন্য বীরভূম মুর্শিদাবাদ বা মালদা থেকে যে সমস্ত মানুষ এতদিন ঘুর পথে দুর্গাপুরে পৌঁছতো তাদের ক্ষেত্রে অনেকটাই কম সময়ের ভেতরে দুর্গাপুরে পৌঁছানো সম্ভব হয়ে উঠবে বলে তারা জানিয়েছেন। জানা গেছে আগামী ২৯ তারিখ বীরভূমের সভা মঞ্চ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন সেই সময় ব্রিজের উপর উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার,গলসির বিধায়ক নেপাল ঘরুই সহ জেলা প্রশাসন। উদ্বোধনের পরেই দুই জেলার মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে ব্রিজ।